তথাকথিত আহলে হাদীসদের এনজিওগ্রাম রিপোর্ট

💬 : 0 comment

মাওলানা আবু রায়হান

মুসলমানদের গোমরাহ করার জন্য সৃষ্ট তথাকথিত আহলে হাদীসদের বিভ্রান্তিতে অনেক সরলসিধে মুসলমানও বিভ্রান্ত হয়ে থাকেন ‘সহীহ হাদীস’ নামের পাঁতানো ফাঁদে। সে কারণে যারা মাযহাব মানেন তাদের উদ্দেশে কিছু কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করছি। মনে রাখতে হবে আহলে হাদীসদের তিরের মূল নিশান হলো ইমামে আজম ইমাম আবু হানীফা (রহ.)। কারণ তিনি কখনও কোনো সময় একমুহূর্তের জন্যও বাতিলকে প্রশ্রয় দেননি। তাই পুরো বিধর্মীজগত তাঁর উপরই বেশি সংক্ষুব্ধ। শীআ, রাফেজী, খারেজীরাতো এক মুহূর্তের জন্যও তাঁকে মেনে নিতে পারেন না। তাদেরই নব্য রূপ বর্তমান তথাকথিত আহলে হাদীসও ইমাম আবু হানীফা (রহ.)কে একমুহূর্তের জন্যও মেনে নিতে পারেন না। তা থেকেও পরোক্ষভাবে একথা আঁচ করা যায় আহলে হাদীস নামের দলটিকে ওসব বাতিল গোষ্ঠীর নব্যরূপ হিসেবে বিধর্মীরা সৃষ্টি করেছে।

এই আহলে হাদীস দলটির ষড়যন্ত্রের প্রথম এবং সর্বোচ্চ পাতানো ফাঁদ হলো ‘সহীহ হাদীস’, তথা বিশুদ্ধ হাদীস ‘জয়ীফ হাদীস’ তথা দূর্বল হাদীস।

এখানে সর্বপ্রথম বিবেচ্য বিষয় হলো সহীহ হাদীস বলতে কি বিশুদ্ধ হাদীস? জয়ীফ হাদীস বলতে কি দূর্বল হাদীস? তথাকথিত আহলে হদীসরা তো সহীহ জয়ীফের উক্ত অর্থই করে থাকে। তাও তাদের এক প্রকার মুর্খতার পরিচায়ক। কারণ হাদীসের বেলায় সহীহ ও জয়ীফ অর্থ বিশুদ্ধ ও দূর্বল নয়। বরং এই দুটো শব্দ হাদীস শাস্ত্রের পরিভাষা মাত্র। সরাসরি বিশুদ্ধ ও দূর্বল অর্থ নেওয়া সম্পূর্ণ মূর্খতা। সহীহ ও জয়ীফ হাদীসের পরিভাষাটা হাদীসের সূত্রপরাম্পরার ভিত্তিতেই হয়ে থাকে। যার কারণে কোনো হাদীসের সনদ বা বর্ণনাকারীর পরস্পর ধারা খুব শক্তিশালী কিন্তু মূল হাদীসটি বিশুদ্ধ নয় এমনও হতে পারে। আবার কোনো হাদীসের বর্ণকারীদের মধ্যে অগ্রহণযোগ্য বর্ণনাকারীও আছে কিন্তু হাদীসটি বা হাদীসের অর্থ পুরোপুরি বিশুদ্ধ এমনও হতে পারে। সুতরাং আহলে হাদীস মুর্খরা যে, সহীহ হাদীস অর্থ বিশুদ্ধ হাদীস বলে আবার জয়ীফ হাদীস অর্থ দূর্বল অর্থ করে তা শুদ্ধ নয়। এটি তাদের উস্তাদগণ ষড়যন্ত্রমূলকই তাদেরকে শিক্ষা দিয়েছে। এর জন্য উসূলে হাদীসের কিতাবাদী পড়লে তখন বোঝে আসবে। তাই সাধারণ লোকদের বলব সর্বপ্রথম সহীহ হাদীস আর জয়ীফ হাদীসের অর্থ বিশুদ্ধ বা দূর্বল হাদীস দ্বারা করবেন না। যারা এই অর্থ করতে শুনবেন তারা উক্ত লোককে উসূলে হাদীসের কয়টা কিতাব পড়েছেন জিজ্ঞেস করতে ভুলবেন না।

অন্যভাষায় বলা যায় হাদীস সহীহ বা জয়ীফ তথা শক্তিশালী বা দূ্র্বল হয় কি না। হাদীস কখনও সহীহ বা দুর্বল হয় না। বরং সহীহ ও দূর্বল হাদীসের অর্থ হলো হাদীসের বর্ণনাকারীগণ নির্ভযোগ্য সে হাদীসের পরিভাষা হলো হাদীসে সহীহ। আর যে হাদীসের বর্ণনাকারীগণের মধ্যে কোন একজন ব্যক্তিও যদি মুহাদ্দিসগণের দেওয়া নীতি মতে অনির্বরযোগ্য হয় সে হাদীসকে জয়ীফ বলা হয়।

এই হল মূল কথা। এর দ্বারা একথা বলা যাবে না যে, হাদীসটিই দূর্ব ও সহীহ কি না। কারণ নবী (সা.) তো দূর্বল হাদীস আর সহীহ হাদীস পার্থক্য করে বলেননি। বরং নবী (সা.) থেকে মুহাদ্দিসদের হাতে হাদীসটি যাদের মাধ্যমে পৌঁছেছে তাদের অবস্থার উপরই বিষয়টি নির্ভর করে।

বর্তমানে বিভিন্ন হাদীসের কিতাবে হাদীস সম্পর্কে যে বিধান দেওয়া হয় এটি কার জন্য। প্রথমে হাদীসের সহীহ বা দূর্বল হওয়াটা যে লোক বলছেন তাঁর জন্য। কারণ এটি তার মতামত। যেমন ইমাম বোখারী (রহ.) একটি হাদীস এনেছেন। সে হাদীস তাঁর হাতে যাদের মাধ্যমে পৌঁছেছে তাদের সব লোকই যদি তাঁর গৃহীত নিয়মানুসারে গ্রণযোগ্য হয় তবে উক্ত হাদীস তার কাছে সহীহ বলে পরিগণিত। আরেকটি হাদীসে দেখা গেছে তাঁর অনুসৃত নীতি অনুসারে উক্ত হাদীসের বর্ণনাকারীদের মধ্যে একজন বা দুজন অনির্ভরযোগ্য। তখন সেটি তাঁর জন্য দূর্বল সনদের হাদীস। সুতরাং সহীহ ও দূর্বল হওয়ার বিষয়টি একান্তই মুহাদ্দিসগণের মতামত। এই নীতি অবলম্বন করা হয়েছে সতর্কতামূলক যাতে হাদীসের নামে অন্য কারো কোনো কথা মুসলমানদের মধ্যে প্রচার না পায়।

তবে মুহাদ্দিস গণ যত হাদীসের কিতাব সংকলন করেছেন, সবই ফিকহের বিন্যাসের অনুসারেই করেছেন। কারণ সুবিন্যস্তভাবে হাদীস সংকলনের কাজ ফিকহা সংকলনের পরে হয়েছে। সেহাহে সিত্তা যে কিতাবগুলোকে বলা হয় এসবের মূল্যায়ন বৃদ্ধি পাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো উক্ত কিতাবগুলো ফিকাহের নিয়মে বিন্যস্ত করা হয়েছে। অণ্যথায় মুসনাদে আহমদ কিতাবটি হলো হাদীসের মধ্যে সবচেয়ে বড় কিতাব। উক্ত কিতাব ফিকাহের ধাচে বিন্যস্ত না করায় তা সচরাচর হয়ে উঠেনি। অথচ সেহাহ সিত্তাত তথা হাদীসের প্রচলিত ৬টি  কিতাবের বেশিরভাগ হাদীস মুসনাদে আহমদে রয়েছে। এটিও হাদীসের মৌলিক কিতাবের একটি। কিন্তু ফিকাহের ধাচে বিন্যস্ত না করায় তা সচরাচর হয়নি।

আবার বর্তমানে যে সকল মুহাদ্দিসীনে কেরামের কিতাব দেখিয়ে তথাকথিত আহলে হাদীসরা সহীহ ও দূর্বল হাদীসের কথা বলছেন এর সবই চার ইমামের পরের সংর্কলন। এখানেই তথাকথিত আহলে হাদীসদের সবচাইতে বড় কার্চুপিটি লুকায়িত। তারা হাদীস সংকলনে মুহাদ্দিগণের মতামত অনুযায়ী যেসকল হাদীসকে জয়ীফ বা সহীহ বলছেন এই মতামত কি চার ইমামের জন্য প্রযোজ্য? কোন ক্রমেই প্রযোজ্য হতে পারে না। কারণ যদি ইমামগণ এসকল মুহাদ্দিসীনে কেরামের বহু আগে দুনিয়াতে আসেন এবং বহু আগে দুনিয়া থেকে চলে যান তখন দেখা যাবে যে হাদীস ইমাম বোখারী (রহ.) এর কাছে ৬/৭ জন মাধ্যম হয়ে পৌঁছেছে সে হাদীসটি ইমাম আবু হানীফার কাছে পৌঁছতে মাধ্যম লেগেছে মাত্র দুজন। আর সে দুজনের মধ্যে একজন সাহাবী আরেকজন তাবেঈ। অথবা মাত্র একজন। তিনিও সাহাবী। তাহলে একটি হাদীসে দেখা যাচ্ছে ইমাম বুখারী (রহ.) এর কাছে পৌঁছতে ৫জন মাধ্যম লেগেছে, সে মাধ্যমগণের চতুর্থজন দূর্বল। সে কারণে সেটি ইমাম বোখারী (রহ.) এর জন্য হাদীস শাস্ত্রের বিধান মতে জয়ীফ। কিন্তু ইমাম আবুহানীফা (রহ.) সে হাদীসটি পেয়েছেন মাঝখানে দুজন ব্যক্তির মাধ্যমে। সে দুজনই নির্ভরযোগ্য। তাহলে ইমাম বোখারী (রহ.) এর মতানুযায়ী সে দূর্বল হাদীসটি ইমাম আবু হানীফা (রহ.) জন্য কখনও দূর্বল হতে পারে না। স্বয়ং ইমাম বোখারীর (রহ.) এর নীতি অনুসারেও ইমাম আবু হানীফার জন্য হাদীসটি জয়ীফ হবে না। সুতরাং হাদীস কুরআন থেকে সংকলিত চার ইমাম বিশেষ করে ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর ফিকাহকে পরের মুহাদ্দিসীনগণের মতামতের উপর ভিত্তি করে সঠিক ও ভুল বলার কোনো কারণ থাকতে পারে না। তথাকথিত আহলে হাদীসগণ যে, চার ইমামের বিশেষ করে ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর কোনো মাসআলায় হাদীসিক দলীলে ঐ মুহাদ্দিস এই হাদীসকে দূর্বল বলেছেন বলে মত প্রকাশ করে এটি তাদের অজ্ঞতারই পরিচয় বহন করে। আমরা অজ্ঞতা বলবনা বরং এসব তাদের ষড়যন্ত্র।

হানফী মাযহাবের অনুসারীদের একটি কথা বলে যাই, ইমাম আবু হানীফা (রহ.) সংকলিত যে কোনো মাসআলার দলীল হিসেবে প্রচলিত হাদীসের কিতাবগুলোতে যে কোনো প্রকার হাদীস পাওয়া যায় সেটাই হবে সবচাইতে সহীহ হাদীস। যদিও উক্ত কিতাবের সংকলক মুহাদ্দিস বা অন্যান্য মুহাদ্দিসগণের কাছে তা দূর্বল। কারণ উক্ত ফিকহী মাসআলার মাধ্যমে আমাদের জন্য উক্ত হাদীসের সরাসরি বর্ণনাকারী হবেন ইমাম আবু হানীফা (রহ.) আর তাঁর চেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং বড় আলেম রাবী আর পাওয়া যাবে না। অন্যান্য মুহাদ্দিসগণের মতামত সে ক্ষেত্রে ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর জন্য গ্রহণীয় নয়। কারণ এসকল মুহাদ্দিসগণ উক্ত হাদীসটি পেয়েছেন মাঝখানে ৫/৬জন ব্যক্তির মাধ্যমে। তারা উক্ত মতও দিয়েছেন এসকল রাবীর অবস্থার উপর পর্যবেক্ষন করে। আর ইমাম আবু হানীফা উক্ত হাদীছ পেয়েছেন মাঝখানে ১/২/৩ জন্য ব্যক্তির মাধ্যমে। তিনি উক্ত রাবীগণের মধ্যে দূর্বল কাউকে পাননি বলে উক্ত হাদীস থেকে মাসআলাটি সংকলন করেছেন। সুতরাং ইমাম আবু হানীফার ফিকাহের কোনো মাসআলার দলীল খোঁজতে গিয়ে যদি কোনো হাদীস দূর্বলও দেখা যায় সেক্ষেত্রে ফিকহের মাধ্যমে ইমাম আবুহানীফার বর্ণার কারণে সেটা শক্তিশালী তথা আমলযোগ্য হবে। সে ব্যাপারে তথাকথিত আহলে হাদীসদের পক্ষ থেকে হাদীসটি দূর্বল বলে ইক্ত মাসআলাকে মানা যাবেনা প্রমাণ কারতে চাওয়া নিতান্ত ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত ছাড়া কিছুই হতে পারে না।

তথাকথিত আহলে হাদীসদের অনেক বড় বড় আলেম এও বলে থাকেন, কে ‍দুনিয়াতে কে আগে এল কে পরে এল তা দেখার বিষয় নয়। যারা একথা বলে তাদের মুর্খতা বা ইসলাম ধংসের চক্রান্তকে আরো প্রকট করে থাকে। তারা বুঝে না এসব কথা বললে তাদের নিজেদের মুখুশই উন্মুচিত হয়ে যায়। আরো বুঝা যায় তারা হাদীস সম্পর্কে নুন্যতমও জ্ঞান রাখেনা । কারণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে ‘কে আগে এল কে পরে এল’ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ না হলেও হাদীসের বেলায় বিষয়টিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোনো একটি হাদীসের মাঝখানে যত মাধ্যম বেশি হবে তার মধ্যে রাবী তথা বর্ণকারীর দূর্বলতার আশংকা বেশি থাকবে। মাধ্যম যত কম হবে দূর্বলতার আশংকা কম হবে। যার মাঝখানে হাদীসের বর্ণনাকারী মাত্র ১/২/৩ হবে তাতে সে আশংকা আরো কম হবে। আবার সে হাদীসগ্রহণকারী যদি ইমাম আবুহানীফার মত লোক হন তখনতো দূর্বলতার আশংকা শূন্যের কোটায় নেমে আসবে। কারণ হাদীস গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি যে শক্তশালী নীতি গ্রহণ করতেন পরে মুহাদ্দিসগণ সে নীতিগুলোকেই মূল হিসেবে নিয়েছেন। পরের মুহাদ্দিসগণের হাদীসের মাঝখানে মাধ্যম আরো বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আরো বিভিন্ন নীতি যুক্ত করেছেন মাত্র।

তবে কোনো লোকের মনমানসিকতা এমন হয় যে, ধরুন সে স্বয়ং হযরত উমর (রা.) হতে হাদীস শুনছেন আবার আলবানীর মতামত শুনেছেন। এখন সে যদি বলে আলবানীর কথাই ঠিক। এরূপ লোকের ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই। বর্তমান কথিত আহলে হাদীসদের সেরূপ ধরে নেওয়া যেতে পারে। প্রকৃত পক্ষে যদি তাদের মনমানসিকতা সেরূপই বিকৃত হয়ে যায় তবে তাতে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা বড় জোর তাদের জন্য দু’আ করতে পারব। যে সকল আহলে হাদীসদের সেরূপ মনসিকতা সৃষ্টি হয় নি তদের জন্য আমাদের বক্তব্যটি প্রযোজ্য বলে বিবেচনা করব।

এবার দেখুন ইমাম বোখারী (রহ.) এর জন্ম ১৯৪ হিজরীতে। আর ইমাম আবু হানীফার (রহ.) এর জন্ম ৮০ হিজারী। ১১৪ বছরের তফাত। স্বাভাবিক নিয়মে হিসাব করতে গেলেও একটি হাদীসের মধ্যে কম হলেও দু’জন বর্ণনাকারী বেশি হবে ইমাম বুখারী (রহ.) এর ক্ষেত্রে। মূলত আরো বেশিও আছে। সুতরাং রাবী বা বর্ণনাকারীর হুকুমের উপর যে হাদীসের সহীহ ও দূর্বল হওয়া নির্ভর সে হাদীসের ক্ষেত্রে ইমাম বোখারী (রহ.) ও ইমাম আবু হানীফা (রহ.) মধ্যে তুলনা করা এবং বীর দর্পে তা প্রচার করা, তোলপাড় করা বিধর্মী ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কি হতে পারে।

ইমাম আবু হানীফার ফেকাকে শুদ্ধ অশুদ্ধ বলার জন্য ইমাম বুখারী বা মুসলিম (রহ.) এর হাদীস শাস্ত্রের বিধানকে দাঁড় করানো কোনো ভাবেই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। এরূপ করে যত জগড়া ফাসাদই সৃষ্টি করা হোক তা হবে বদদ্বীনি।

মোট কথা হলো ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর যে কোন মাসআলা সম্পর্কে আপনি একটি হাদীস পেয়েছেন, মনে করতে হবে এর উপর শক্তিশালী আর দলীল নেই। মুহাদ্দিসগণের মতানুসারে সেটা সহীহ হলেও ভাল জয়ীফ হলেও সমস্যা নেই।

তথাকথিত আহলে হাদীসরা বলবে হাদীসটি জয়ীফ আমলযোগ্য নয়। তারা কত মুহাদ্দিসদের মতামত বলবে। (যদিও বলে তারা তাকলীদ করে না।) অথচ আমরাতো হাদীসটির ব্যাপারে উক্ত মুহাদ্দিসগণের মতামতের ভিত্তিতে আমল করছি না। বরং উক্ত হাদীসের উপর আমল করছি ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর মতামতের উপর। তার মতে উক্ত হাদীস বা উক্ত হাদীসের অর্থ জয়ীফ নয়। সুতরাং আমার জন্যও হাদীসটি জয়ীফ বা আমল অযোগ্য নয়। বরং আমল করাই জরুরী।

হানফী মাজহাবের একটি মাসআলার দলীল হিসেবে একটি হাদীস ফেইস বুকে দিলেন। আহলে হাদীসের পক্ষ থেকে কেউ বলল হাদীসটি দূর্বল। কারণ অমুক মুহাদ্দিস উক্ত হাদীসের ঐ রাবীকে দুর্বল বলেছেন, মুনকার বলেছেন। আপনি বলবেন সটি আসহ ফিলবাব। অর্থাত সে বিষয়ে হাদীসটিই সবচাইতে বেশি সহীহ। কারণ ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এটিকে সহীহ বলেছেন এবং এই হাদীস অনুযায়ীই মাসআলা বলেছেন। তখন মাসআলা খতম। কারণ পুরো আহলে জগতের বাপের কুদরাত নেই হাদীসটিকে ইমাম আবু হানীফার জন্য দূর্বল বলবে। এটি তার জন্য দূর্বল হতে। কারণ সে আলবানীর মত বিশ্ব সেরা বেআদবের তাকলীদ করে। যে মুহাদ্দিস উক্ত হাদীসকে দূর্বল বলেছেন তাঁর কোনো সমস্যা নেই।তিনিতো নিজের প্রাপ্ত রাবীদের অবস্থা বোঝে নিজের নীতি অনুসারে নিজ যুগের অবস্থা বিবেচনায় দূর্বল বলেছেন। সেটা তো তিনি বড় খিদমত করেছেন।তিনি সাথে একথা বলেননি যে, ইমাম আবু হানীফা হাদীসটি নিয়ে ভুল করেছেন। বরং উক্ত মুহাদ্দিস কত মেহনত করে হাদীসটি সম্পর্কে গবেষণা করে হুকুম লাগিয়েছেন সে কারণে আল্লাহ তাআলা তাকে উত্তম প্রতিদান দেবেন। কিন্তু  এখানে গদতটা হলো এই তথাকথিত আহলে হাদীসের। সে উক্ত মুহাদ্দিসের মতামতের সাথে ইমাম আবু হানীফার মতামতকে সাংঘর্ষিক হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। সেটাই হল আহলে হাদীসদের বড় শয়তানী, বড় চক্রান্ত।

সুতরাং আহলে হাদীসদের ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়ার কোনো কারণ নেই মুসলমানদের। এদের ভিত অতি দূর্ব্ল। বর্তমানে তথাকথিত আহলে হাদীসরা আলবানী সাহেবকে পীর মানার কারণে এদের ভিত আরো দূরবল হয়ে পড়েছে।

চার ইমাম বিশেষ করে ইমাম আবু হানীফার ফেকাহকে নিয়ে বাতিল শক্তিরা হাজার বছর ধরে ষড়যন্ত্র করেছে এবং করছে। এক ফুতকারে উড়িয়ে দিতে চেয়েছে। কিন্তু কোনো যুগে কোনো সময় এই ষড়যন্ত্র টেকসই হয়নি। তথাকথিত আহলে হাদীস নামের এই ষড়যন্ত্রও টাকার জোরে সামান্য প্রচারিত হলেও তাদের গোমারাহী মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।

নিচে কয়েকজন ইমামের সংক্ষেপ জবনী দেওয়া হল।

কথিত আহলে হাদীসদের আরেকটি ফাঁদ হলো হাদীস মানতে হবে, ফেকাহ নয়। হাদীসে ফেকার কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে হাদীসের কথা। খুব সুন্দর কথা। মনে হয় খুব সত্য কথা বলে ফেলেছেন। অথচ এর ভিতরেই লুকিয়ে আছে হাজার মিথ্যা। পবিত্র হাদীস শরীফে কোথাও বলা হয় নি মুসলমানদেরকে হাদীসই মানতে হবে। বরং যেখানে এরূপ কথা এসেছে সব খানেই বলা হয়েছে তোমরা কুরআন ও সুন্নাহকে আকড়ে ধর। অর্থাৎ কুরআন হাদীস উভয়কে আকড়ে ধর। কুরআন হাদীস উভয়টি সমন্বয়ই হলো ফেকাহ। আর হাদীসে তাই মানার জন্য বলা হয়েছে। শুধু হাদীস হাদীস বলে চিল্লাতে বলেনি। উক্ত হাদীসের মূল অর্থ হলো কুরআন ও হাদীসে সে যেসকল বিধান দেওয়া হয়েছে সেগুলো বুঝ এবং মান। তাই হলো ফেকাহ। সুতরাং আহলে হাদীসদের হাদীস মানার কথাটির ব্যাখ্যা দুঅর্থ হতে পারে। একটি হল তোমরা কুরআন মানবানা, শুধু হাদীস মানবা। নাউজু বিল্লাহ। তাদের নাম থেকেও তা প্রমাণিত হয়। কারণ এদিকে তারা আহলে হাদীস বলে অন্য দিকে আরেকটা আছে আহলে কুরআন। আহলে কুরআনরা হাদীস মানে না। তাতে বুঝা যায় আহলে হাদীস নামের দল সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্যে কুরআন নামানার একটা যোগসূত্র থাকতে পারে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় তাদের ফেকাহের প্রতি বিদ্বেষ ভাব দেখে। কারণ ফেকাহ হলো কুরআন হাদীসের নির্যাস বা সমন্বিত রূপ। তা বাদ দিয়ে কারো পক্ষে ধর্মের উপর চলা সম্ভব নয়। যখন এই মূল বিষয়টিরই তারা বিপক্ষে তাহলে বুঝা যায় এরা ইসলামের পক্ষের কেউ নন।

সম্প্রতি আরেকটি বিষয় চোখে পড়ার মত। আহলে হাদীসরা সবসময় বলে তারা তাকলীদ করে না। তাই তারা ফেকাহের প্রতি বিদ্বেষী। কিন্তু আপনি দেখবেন তাদের মাসআলা মাসায়েলের রেফান্সে যে বিষয়ে হাদীস পাওয়া যায়নি সে বিষয়ে উসাইমীনের রেফারেন্স দিয়ে থাকে। ফতওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়ার রেফারেন্স দিয়ে থাকে। তাহলে এসব কি? এসব কি তাকলীদ নয়? যদি হাদীসে এই থাকে যে, উসাইমীন, ইবনে তাইমিয়া, শাওকানী, দাউদে জাহেরীকে আর আলবানী জাকের নায়েক কে মানা মানেই হলো হাদীস মানা। তাতে আমাদের বলার কিছুই থাকবে না। কারণ সেটা তাদের বিধান মতেই শিরিক হয়ে যাবে। আর তারা হবেন নিজেদের ফতওয়া অনুযায়ী সবচাইতে খারাপ মুশরিক।  তখন আমরা বলব তোমরা বিংশশতাব্দীর জাহেল আলবানীকে মানতে পারলে আমরা ইসলামের সোনালী যুগের ইমাম আবু হানীফাকে মানলে সমস্যা কোথায়? রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন খাইরুল কুরুন তথা ইসলামের, মুসলমানদের বরং সারা দুনিয়ার সবচাইবে উত্তম যুগ হলো স্বয়ং নবী (স.) এর ‍যুগ, তাঁর সাহাবর যুগ, তাবেয়ীর যুগ। এই তিন যুগই সর্বোত্তম যুগ। আর সে হিসেবে হসেব করতে গেলে বর্তমান যুগ হবে সর্বনিকৃষ্টের কাছাকাছি যুগ। তাহলে এই যুগের কয়েকশ আলবানীকে মানার চেয়ে উক্ত যুগের অর্ধেক আবু হানীফাকে মানাই হবে সর্বোত্তম কাজ। হাদীসের নামে যতই ষড়যন্ত্র করা হোক, প্রতারণা করা হোক এটিই বাস্তব।

ফিকাহ নামানা তো তখাকথিত আহলে হাদীসদের মুখের কথা, অথচ সম্প্রতি তারা ফতওয়ার কিতাব বের করছেন। উক্ত ফতওয়ার কিতাবে বড় বেআদবী লক্ষ করা যাচ্ছে। তাদের ফতওয়ার কিতাবে তারা ইমাম আবু হানীফা, শাফেয়ী, মালেক ও আহমদ হাম্বলের মতামত লেখার পর তাদের সাথে মিলিয়ে বলে থাকে এই মাসআলায় মুবারকপুরী, আলবানী প্রমূখের মতামত এটি। এর চাইতে চরম বেআদবী আর কি হতে পারে। এমন ভাষ্যও এখন তাদের ফতওয়ার কিতাবে পাওয়া যায় এই বিষয়ে ইবনে উমর (রা.), ইবনে আব্বাস (রা.) এর মতামত এটি, ইমাম আবু হানীফা, ইমাম শাফেয়ী প্রমূখের মতামত এটি। আলবানীর মতামত এটি। অথবা আলবানী এটিকে প্রধান্য দিয়েছেন। এই হল তাদের ফেকাহ। অর্থাৎ তাকলীদের বিরোধিতার নামে মুসলমানদেরকে বিংশ শতাব্দির বিধর্মীদের সৃষ্ট লোকের তাকলীদ করানোর অপ চেষ্টা। আবার তাদের উদ্দেশ্য হতে পারে সাহাবী ও তাবেয়ীদের সাথে আলবানী শাওকানীকে সমান করে দেখানো। এসব শিয়া সম্প্রদায়ের ন্যায় ইসলামের বিরুদ্ধে সুক্ষ ষড়যন্ত্র বৈ আর কি হতে পারে।

যে দল তাকলীদের বিরোধীতা করতে গিয়ে এক পর্যায়ে বলে বেড়ায় নবী (সা.) এর স্বয়ংক্রিয় কথা, সাহাদের কথা ইসলাম নয়। নাউজু বিল্লাহ। সেরূপ দলের পক্ষে আলবানীর মতামত পরিপূর্ণ ও সঠিক ইসলাম বিবেচিত হয় কি করে। তার অর্থ কি এই নয় নবী (সা.) মাইনেস, সাহাবও মাইনেস নাউজু বিল্লাহ। আলবানী আর শওকানীই প্লাস। এই কারণেই এখন তারা যে ভাবটা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে তাহলো নবী (সা.) এর হাদীস আলবানীর সর্টিফিকেট ছাড়া চলবে না। চলতে পারে না। না্উজু বিল্লাহ। সে কারণে এখন তথাকথিত আহলে হাদীসদের কাছে সবচাইতে গ্রহণযোগ্য হাদীসের কিতাব হলো আলবানীর তাহকীক করা হাদীসের কিতাব। ইমাম তিরমিযী যে হাদীসকে হাসান বলেছেন তা তারা মানে রাজী নয় বরং আলবানী যদি সহিহ বলে তাই তারা মানে। ইমাম বুখারী লেখে যাওয়া কিতাব তারা মানতে রাজি নয়। বুখারী শরীফ যেটা আলবানী তাহকীক করেছে সেটাই তারা মানে। সেরূপ কোনো ইমামের কথা তারা মানে রাজী নয় কোনো সাহাবীর কথাও মানতে রাজী নয়, কোনো তাবেয়ী তাদের সামনে মানুষও নয় তাদের চায় আলবানী সহীহ বলেছে কিনা। এই হলো তাদের ইসলাম ধর্ম!!!

তারাকি বুখারী মানে? তারা বোখারী শরীফ মানে না। তারা বলে এমন বোখারী প্রয়োজন যেখানে আলবানীর তাখরীজ বা তাহকীক আছে। তারা এমন মুসলিম শরীফ মানে যাতে আলবানীর তাহকীক আছে। তারা এমন তিরমিযী শরীফ মানে যাতে আলবানীর মতামত আছে। তাহকীক, তাখরীজ যেটাই বলুন সবই মতামত। আলবানীর তাহকীক অর্থ আলবানীর মতামত। আলবানীর তাখরীজ অর্থ আলবানী মতামত।

তাতে কি বঝলেন, তথাকথিত আহলে হাদীসরা দুনিয়ায় একমাত্র আলবানীর মতামতই মানেন। তাদের সামনে কি রাসূল (সা.), কি সাহাবী কি তাবেয়ী। যদি ইমাম বুখারী শরীফ মানত তাহলে আলবানীর মতামত কেন প্রয়োজন হলো। যদি মুসলিম শরীফ মানত তাহলে আলবানীর মতামত কে প্রয়োজন হলো। তাদের যবিতীয় আচার অনুষ্ঠান ও বাস্তব পদচারণা থেকে একথাই স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো তারা হাদীস শরীফ, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ কিছুই মানেন না। বরং আলবানী শরীফই মানেন। সুতরাং চার মাযহাবের মানার প্রশ্নই ওঠে না। যারা একমাত্র আলবানী শরীফই মানবে আল্লাহ তাদেরক কাছ থেকে সলফে সালেহীন তথা ফেকাহের ইমামদের মানা, সাহাবীদের মানা, ইমাম বুখারী আর ইমাম মুসলিম প্রমূখকে মানার যোগ্যতাই ছিনিয়ে নেবেন। তাতে সন্দেহ নেই।

সুতরাং মুসলিম ভাই ও বন্ধুগণ ইসলাম পালনে সতর্ক হোন। যে কারো কথায় ইসলাম পালন করতে গেলে মহাবিপদের সম্মুখীন হতে হবে।

যুগ যুগ ধরে বিধর্মীদের ষড়যন্ত্র ছিল, তারা চেয়েছে মাজহাবের ইমামদের বিরুদ্ধে কাউকে দাড় করানো গেলেই হবে। সে কারণে যুগে যুগে তাদের চেষ্টা ছিল কোনো লোককে দাড় করিয়ে দেই। যাতে দ্বন্ধ লেগে যাক। তারই অংশ হিসেবে আল্লামা শওকানীকে দাঁড়া করাতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। জাকির নায়িককে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনিও প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। আলবানীকেও সেসূত্রে দাঁড় করানো হয়েছে। তিনিও প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। কোন যেন মাদানী নামেও কেউ এখন খুব বক্তৃতা বক্তব্য দিয়ে বেড়ান। তিনি প্রত্যাখ্যাত। এসব সাহাব দুশমনীর ফলাফল। তাবেয়ী ও সলফদের দুশমনীর ফলাফল।

অনলাইনে বসলেই বড় বড় পোষ্ট অমুক বেদআতী, অমুকে লোক শিরিক করছে। অথচ সে বেচারাই যে, সর্ব নিকৃষ্ট শিরিকে লিপ্ত তার খবর কিন্তু নিজের নেই। আমি আন্তরিক হয়ে বলছি, সামান্য দুনিয়াবী স্বার্থের কারণে যদি কেউ সলফদের বিরোধীতা করার এই ফাঁদে পা দেন আল্লাহ তা’আলা হক বোঝার এবং হক মতে আমল করার ক্ষমতাই ছিনিয়ে নেবেন। তাই যে কোনো পদক্ষেপ বুঝে চিন্তে দেওয়া প্রয়োজন। যাকেই সাপোর্ট করবেন, তার আদর্শ দেখেই সাপর্ট করবেন। যারা সলফে সালেহীনের কেোনো একজন ব্যক্তির বিষোদগার করবে মনে রাখবেন তার মধ্যে সে পরিমাণ ভেজাল বিদ্যমান।

বিশেষ করে হানফীদের বিরোধিতায় যারা খুব লম্পঝম্প করবে বুঝতে হবে এর কুঠার বল কোনো বাতিল শক্তি থেকেই আসছে। কারণ হানফী মাজহাব হানফী মাজহাব একার কোনো বক্তব্যের নাম নয়। যুগ যুগ ধরে হাজার হাজার যুগ শ্রেষ্ঠ ইমাম ফকীহ, মুহাদ্দিসগণের গবেষণারই ফসল হানফী মাজহাব। আর ইমাম আবু হানীফাই দুনিয়াতে সুবিন্যস্ত ফেকাহের জনক। তাঁর ফিকাহ নিয়ে বাকীরা গবেষণা আরম্ভ করেছেন। এই কথা সকল ইমামের স্বীকৃত।

এখন আরেকটা কথা বলি, আচ্ছা তথাকথিত আহলে হাদীসরা যে সব বিষয়ে তর্ক করে থাকে যেমন, আমীন উচ্চ সরে বলা, রফয়ে ইয়াদাইন করা ইত্যাদি। এসব ব্যাপারে এরা কি এই পর্যন্ত এসব বিষয়ের ব্যাপারে কোনো সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছতে পেরেছে? তারা বলতে পারবে শরীয়ত অনুযায়ী এই আমলগুলো কি ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত নাকি মুস্তাহাব।

ফরজ ওয়াজিবতো হতেই পারে না। কারণ কোনো আহলে হাদীস বলতে পারবে না উচ্চ স্বরে আমীন না বললে নামায হবেই না। রফয়ে ইয়াদাইন না করলে নামায হবে না। যদি ফরজ ওয়াজিব না হয় তাহলে এই আলগুলোর বিধান কি?

এই ব্যাপারে আহলে হাদীসগণ এখনও ঐক্য মতের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট কিছু বলতে পারবে না। কারণ তাদের ইমামগণ এসব ব্যাপারে মতানৈক করেছেন। যদি মুস্তাহাব হয় তাহলে কথা হলো, আহলে হাদীসদের নীতি হলো কোনো মুস্তাহাব কাজকে গুরুত্ব সহকারে নিয়মিত করলে সেটা বিদআতের পর্যায়ে পড়ে যাই। সে কারণে তারা মুসলমানদের বিভিন্ন মুস্তাহাব কাজকে বিদআত বলে ফতওয়াও দিয়ে থাকেন। তাহলে তাদের আমীন উচ্চস্বরে বলার প্রতি যে গুরুত্ব দেওয়া হয় তাতো আমীনের কি অবস্থা হচ্ছে, তা তারা তাদের নীতি অনুসারেই বলুক। সেটা বললে বলবে সুন্নাত মুস্তাহাব ওয়াজিব ফরজ এগুলো কি হাদীসে আছে? হাদীসে নেই। বরং হযত ফরজ হবে নতুবা মুস্তাহাব হবে। সে নীতি অনুসরেই বলুন আমীন উচ্চ স্বরে বলা কি? বলতে পারবে না। কস্মিন কালেও না। কারণ এব্যাপারে এখনও তারা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছতে পারেনি। তাদের এসব মৌলিক বিষয়াদির হালই যদি এরূপ অবস্থা হয় তা হলে অন্যান্য বিষয়ের কি অবস্থা? তা থেকেও তাদের আসল চেহরা ফোটে উঠে।

যাই হোক কাউকে খাটো করা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার উদ্দেশ্য হলো যারা ষড়যন্ত্রমূলক বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে তদের ব্যাপারে মুসলমানদের সতর্ক করা, সচেতন করা।  কে আহলে হাদীস করলো বা কি করলো আমাদের কোনো মেটার না। কিন্তু যখন আহলে হাদীস নাম দিয়ে আকাবিরদের বিষোদগার করা হয়, ধর্মের মূল ব্যক্তিদের হেয় প্রতিপন্ন করা হয় তখন এসব বাতিলদের মুখোশ উন্মুচন করা আমাদের দ্বীনি দায়িত্ব হয়ে যায়। সে কারনেই দর্ঘক্ষন আপনাদের সময় নেওয়া।

ঈষা বা ক্রোধ নয় সঠিক বিষয়টি সঠিকভাবে বোঝার চেষ্টা করুন এটিই আমাদের কাম্য।

আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক দ্বীন বোঝার তাওফীক দান করুন।